মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১১:২৩ অপরাহ্ন
দেশে দিন দিন নারী ও শিশুদের প্রতি নির্যাতনের মাত্রা বাড়ছেই। মূল দায় পুরুষের ওপর বর্তালেও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে পুরুষ ও কিশোরদের সম্পৃক্ততা এবং ইতিবাচক ভূমিকাগুলোর উপস্থাপনা ও প্রচারণার অভাবে নারীর প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির যেমন পরিবর্তন আসছে না তেমনি কমছেও না নারীর প্রতি সহিংসতার মাত্রা। এজন্য নারী ও শিশুদের প্রতি সব ধরনের নির্যাতন রোধে পুরুদের সম্পৃক্ত করে সহিংসতা প্রতিরোধে উদাহরণ সৃষ্টি করতে তাগিদ দিয়েছেন বক্তারা। এক্ষেত্রে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে মিডিয়ার বিশাল ভূমিকা রয়েছে। পাশাপাশি নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ অবসানে স্কুলের পাঠ্যক্রমে নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা ও নৈতিক শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সচেতনতা গড়ে তোলার কাজটি প্রথমত নিজের বাািড় থেকেই শুরু করতে হবে। বরিশালে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা উঠে আসে।
এনগেজ মেন এন্ড বয়েজ নেটওয়ার্ক ফর প্রোমোটিং জেন্ডার জাস্টিস বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় ও ব্রাকের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নারী ও শিশুর প্রতি জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে মিডিয়া মোবিলাইজেশন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উন্নয়ন সংস্থা প্রত্যাশা। বরিশাল রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি সুশান্ত ঘোষের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আনিসুর রহমান স্বপন, আলী জসিম, বিধান সরকার বাপ্পী মজুমদার, মুশফিক সৌরভ, আরো অনেক গণমাধ্যমর্কমী। প্রত্যাশার নির্বাহী পরিচালক আ: বাতেন রুশদীর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের জেন্ডর জাস্টিস এন্ড ডাইভারসিটি বিভাগের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো: সেলিম মোল্লা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে তথ্যপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মডেল ইয়ুথ পার্লামেন্টের নির্বাহী প্রধান এবং মেন এনগেজ অ্যালাইয়েন্সের চেঞ্জমেকার সোহানুর রহমান।
তথ্যপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশের কোথায় নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে তা মিডিয়ার মাধ্যমে দ্রুরুত জানা যায় এবং সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া যায়। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার একটি বড় কারণ পুরুষের ক্ষমতা ও পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি । এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য সবাইকে বিশেষ করে পুরুষ ও কিশোরদের ভূমিকা রাখতে হবে। সহিংসতা কমাতে হলে ছোট বয়স থেকেই শিশুদের নারীর প্রতি সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে নারীর প্রতি সহিংসতা রুখতে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। এ ছাড়া নারীর নিরাপত্তার উন্নয়ন, সহিংসতার শিকার নারীদের আইনি সেবা পাওয়ার সহজপ্রাপ্যতা, সহিংসতা রোধে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে সে বিষয়গুলো সরকার ও উন্নয়ন অংশীদারদের স্বমন্নিত কার্যক্রমের উপর তাগিদ দেয়া হয়। নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে পুরুষ ও কিশোরদের সম্পৃক্তকরণে গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসতে আহবান জানানো হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা স্থানীয় পর্যায়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের সঠিক পরিসংখ্যান এবং নাগরিক সমাজের সাথে মিডিয়ার কার্যকর সম্পর্কের উপর গুরুত্বারোপ করেন। সুযোগ থাকলে নারীরা যে সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পারেন, সেটি তাঁরা বারবার প্রমাণ করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষার প্রচার এবং অবদমনের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে কীভাবে সঠিক যৌনচর্চার মাধ্যমে সহিংসতা পরিহার করা যায় এই বিষয়ক প্রচারাভিান তরুণদের মধ্যে পরিচালনা করার সুপরিশ করেন বক্তারা ।